সনাতন ধর্মে একাদশীর উপবাসের বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। এর মধ্যে কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশী, যাকে রমা একাদশী বলা হয়, তা পাপের বিনাশকারী এবং পরিত্রাণ প্রদানকারী বলে বিবেচিত হয়। এই দিনে, ভগবান বিষ্ণু এবং তাঁর শক্তি দেবী লক্ষ্মীর উপাসনা করে, ভক্ত পার্থিব সুখ, সমৃদ্ধি এবং মোক্ষ লাভ করেন।
রমা একাদশীর অর্থ এবং পৌরাণিক তাৎপর্য
‘রাম’ অর্থ দেবী লক্ষ্মী। এই একাদশী ভগবান বিষ্ণুর সাথে দেবী লক্ষ্মীর আশীর্বাদ পাওয়ার এক দুর্দান্ত সুযোগ। পদ্মপুরাণ এবং স্কন্দপুরাণে বর্ণিত কাহিনী অনুসারে, এই একাদশীর উপবাস পালন করলে ভক্তের সমস্ত পাপ বিনষ্ট হয়, পূর্বপুরুষরা মোক্ষ লাভ করেন এবং ভগবান শ্রী হরির আবাসে স্থান লাভ করেন। শ্রীকৃষ্ণ নিজেই এই উপবাসের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন যে, যে ব্যক্তি ভক্তি সহকারে রমা একাদশীর উপবাস পালন করে, সে অশ্বমেধ যজ্ঞের মতোই ফল লাভ করে।
দান, সেবা এবং পরোপকারের গুরুত্ব
রমা একাদশী কেবল উপবাস ও সংযমের দিন নয়, বরং এটি সেবা, দান এবং পরোপকারের জন্য একটি বিশেষ উপলক্ষ। এই দিনে খাদ্য, বস্ত্র, দরিদ্রদের সাহায্য, প্রতিবন্ধীদের সেবা এবং অসহায়দের জন্য দান শতগুণ বেশি ফলপ্রসূ হয়। শ্রীমদ্ভগবদ গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ দানের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন-
‘যজ্ঞদানপতাঃ কর্ম ন ত্যজ্যম কর্মমেব তৎ।
যজ্ঞো দানম্ তপশ্চৈব পাবনানি মনীষীনাম্।
অর্থাৎ, ত্যাগ, দান এবং তপস্যা – এই তিনটি কাজ কখনই পরিত্যাগ করা উচিত নয় কারণ এগুলি সাধককে পবিত্র ও পবিত্র করে তোলে।
রমা একাদশীতে দান ও সেবার পুণ্য
রমা একাদশীর শুভ উপলক্ষে, আপনিও নারায়ণ সেবা সংস্থার প্রতিবন্ধী, এতিম এবং দরিদ্র শিশুদের জীবনে আশার প্রদীপ জ্বালাতে পারেন। এই দিনে, “তাদের জন্য আজীবন খাদ্য” (বছরে একদিন) সেবা প্রকল্পে অংশগ্রহণ করে রমা একাদশীর পরম পুণ্য অর্জন করুন।