চার ভাইয়ের মধ্যে বড় ছেলে আকাশ কুমার মধ্যপ্রদেশের নৈনপুরে এক চিন্তামুক্ত জীবনযাপন করতেন। তিনি তার শৈশবের বেশিরভাগ সময় তার বাড়ির কাছে রেললাইনের পাশে খেলাধুলা করে কাটিয়েছিলেন। তবে, সবকিছু বদলে যায় এবং ২০২২ সালের মে মাসের এক ভয়াবহ সন্ধ্যায় তার জীবন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়, যার ফলে তিনি অন্যদের সহায়তার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। ১১ মে সন্ধ্যার কথা মনে পড়লে পরিবার কাঁপিয়ে ওঠে।
একদিন, পাড়ায় এক বিয়ের অনুষ্ঠানে, আকাশ সহ সকলেই নাচ-গান করছিল। কিন্তু যখন সে ক্লান্ত হয়ে পড়ে, তখন সে বিশ্রামের জন্য তার বাড়ির বাইরে রেললাইনের উপর বসে পড়ে। অজান্তেই, সে ঘুমিয়ে পড়ে, এবং একটি দ্রুতগামী ট্রেন তার উপর দিয়ে চলে যায়, তার দুই পা কেড়ে নেয়। কেউ যখন আকাশকে রক্তাক্ত অবস্থায় অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে, তখন বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। বাবা-মা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পাড়ার লোকজন তাকে তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
চার দিন অচেতন অবস্থায় থাকার পর সে জেগে ওঠে। সে এবং তার পরিবারের সদস্যরা জানতে পেরে মর্মাহত হয়ে যায় যে সে তার দুই পা হারিয়েছে। আকাশের বাবা কৃষিকাজ করেন এবং তার মা ছয়জনের পরিবারের ভরণপোষণের জন্য একটি মেয়ের দোকানে কাজ করেন। প্রায় এক বছর ধরে ঘরে আটকে থাকা এবং বিছানায় থাকা আকাশ নেতিবাচক আবেগের শিকার হন।
একদিন টিভি দেখার সময় তিনি নারায়ণ সেবা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানতে পারেন, যা প্রতিবন্ধীদের বিনামূল্যে কৃত্রিম অঙ্গ প্রদান করে। নতুন আশা নিয়ে, তিনি ২৮শে মার্চ, ২০২৩ তারিখে সংস্থাটিতে যান, যেখানে কৃত্রিম অঙ্গের দল তাকে বিশেষ কৃত্রিম পা পরিমাপ করে এবং ফিট করে।
কৃত্রিম অঙ্গের উপর নিজেকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আকাশের মুখে আনন্দের ঝলক দেখা যায়। তিনি সংস্থাটিতে মোবাইল মেরামতের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণও নিচ্ছেন, স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন এবং তার জীবন পুনর্নির্মাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। এই অভিজ্ঞতা আকাশকে তার স্বপ্ন পূরণের জন্য একটি নতুন উদ্দেশ্য এবং দৃঢ় সংকল্প দিয়েছে।