সনাতন ধর্মে একাদশী উপবাসের একটি বিশেষ স্থান রয়েছে। প্রতিটি একাদশীরই কিছু বিশেষত্ব থাকে এবং সকলের উদ্দেশ্য হল পাপের বিনাশ এবং মোক্ষলাভ। তন্মধ্যে পৌষ পুত্রদা একাদশী পৌষ মাসের শুক্লপক্ষের একাদশী তিথিতে পড়ে। এই একাদশী বিশেষভাবে সন্তানের সুখ, সমৃদ্ধি, মোক্ষ এবং ভগবান বিষ্ণুর আশীর্বাদ প্রদানকারী হিসেবে বিবেচিত হয়। এই দিনে উপবাস করলে ভক্তের সমস্ত পাপ বিনষ্ট হয় এবং তার সমস্ত ইচ্ছা পূর্ণ হয়।
পৌষ পুত্রদা একাদশীর পৌরাণিক গুরুত্ব
পদ্মপুরাণ অনুসারে, যারা সন্তানের সুখ পেতে চান তাদের জন্য এই উপবাস খুবই উপকারী। এই দিনে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যুধিষ্ঠিরকে বলেছিলেন যে, যে ব্যক্তি বিশ্বাস ও ভক্তির সাথে পৌষ পুত্রদা একাদশীর উপবাস পালন করে, তার জীবনের সমস্ত দোষ-ত্রুটি বিনষ্ট হয় এবং সে উত্তম সন্তান, সুখ ও সমৃদ্ধি এবং অবশেষে মোক্ষ লাভ করে। এই উপবাসের প্রভাব অশ্বমেধ যজ্ঞের মতোই বলে জানা যায়।
দান, সেবা এবং পরোপকারের গুরুত্ব
পৌষ পুত্রদা একাদশী কেবল উপবাস, সংযম এবং জপের দিন নয়, বরং সেবা, দান এবং করুণার দিনও। এই দিনে দরিদ্র, প্রতিবন্ধী, এতিম, বৃদ্ধ এবং ক্ষুধার্তদের খাদ্য দান করলে শতগুণ বেশি পুণ্য লাভ হয়। কূর্ম পুরাণে বলা হয়েছে-
স্বর্গায়ুরভূতিকামেন ও পাপোপাশান্তয়ে।
মুমুক্ষুণ চ দাতব্যম্ ব্রাহ্মণিভ্যাস্থবহম্।
অর্থাৎ, যে ব্যক্তি স্বর্গ, দীর্ঘায়ু এবং সমৃদ্ধি কামনা করে এবং পাপ থেকে মুক্তি পেতে চায়, তার উচিত ব্রাহ্মণ এবং যোগ্য ব্যক্তিদের উদারভাবে দান করা।
পৌষ পুত্রদা একাদশীতে দান ও সেবার পুণ্য
এই শুভ উপলক্ষে, নারায়ণ সেবা প্রতিষ্ঠানের প্রতিবন্ধী, এতিম এবং দরিদ্র শিশুদের জন্য আজীবন খাবার (বছরে একদিন) সেবা প্রকল্পে যোগ দিন এবং পৌষ পুত্রদা একাদশীর পুণ্য অর্জন করুন। আপনার সেবা এবং দান কেবল আপনার জীবনে সুখ, সমৃদ্ধি এবং সন্তানদের আশীর্বাদই বয়ে আনবে না, বরং আপনার পুণ্য এই অভাবী মানুষদের জীবনে ভালোবাসা, করুণা এবং আশার প্রদীপও জ্বালাবে।