প্রাকৃতিক চিকিত্সা (ন্যাচারোপ্যাথি) হলো এক ধরণের স্বাস্থ্যসেবা যেটা সমসাময়িক এবং ঐতিহ্যগত চিকিত্সার পদ্ধতির মিশ্রণ দিয়ে তৈরি। এর মধ্যে রয়েছে পরিপূরক/বিকল্প প্রাকৃতিক প্রতিকার এবং সমসাময়িক ওষুধ। এই পদ্ধতিটা অনেকটা জীবনধারার মতো, যার অন্তর্নিহিত ধারণাটা হলো স্বাস্থ্যকর খাবার, নিয়মিত ব্যায়াম এবং প্রাকৃতিক নির্যাস দিয়ে জৈবিকভাবে সমস্ত রোগ নিরাময় করা যায়। ভারতের শীর্ষস্থানীয় প্রাকৃতিক চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে উপলব্ধ চিকিত্সাগুলোর মধ্যে কোনো রকম বিরতি না নিয়ে (ইন্টারমিটেন্ট) উপবাস, ম্যাসেজ, হাইড্রোথেরাপি, আকুপাঙ্কচার, যোগব্যায়াম এবং ধ্যান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রাকৃতিক প্রতিকারের উপর বেশি জোর দেওয়ার কারণে, এটাকে আয়ুর্বেদের আরো অশোধিত এবং আদিম রূপ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
নারায়ণ সেবা সংস্থান প্রাকৃতিক চিকিত্সা (ন্যাচারোপ্যাথি) কেন্দ্র উদয়পুরে অবস্থিত এবং এখানে এই বিশ্বাস নিয়ে কাজ করা হয় যে সমস্ত স্বাস্থ্য সমস্যার চিকিৎসা প্রকৃতির মাধ্যমে করা যায়। এখানে কোনো ড্রাগ ব্যবহার করা হয় না কারণ এগুলো অপ্রাকৃতিক এবং মানুষের দ্বারা তৈরি করা। ন্যাচারোপ্যাথির পদ্ধতি বিশ্বাস করে যে শরীর প্রাকৃতিক অভ্যন্তরীণ নিরাময় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিজেকে নিরাময় করতে পারে।
প্রাকৃতিক চিকিত্সা (ন্যাচারোপ্যাথি) সমগ্র মানবদেহের চিকিৎসার জন্য একটা "সম্পূর্ণ" পদ্ধতি অবলম্বন করে - এটা লক্ষণগুলোর পরিবর্তে রোগের অন্তর্নিহিত কারণকে নিরাময় করার চেষ্টা করে। রোগ নির্ণয় এবং থেরাপির প্রাকৃতিক কৌশলগুলো শরীরের নিরাময়ের ক্ষমতাকে বাড়াতে ব্যবহার করা হয়।
নারায়ণ সেবা সংস্থান-এর প্রাকৃতিক চিকিত্সকেরা অপারেশন বা ওষুধের ব্যবহারকে সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে প্রাকৃতিক শক্তির উপর ভিত্তি করে চিকিত্সা করার দিকে মনোনিবেশ করে। এই অলাভজনক সংগঠন (এনজিও) অন্যান্য সিস্টেমের লক্ষণীয় চিকিত্সার কৌশলগুলোকে অবলম্বন করে মানসিক চাপকে কমিয়ে এবং খাবার ও জীবনধারা পরিবর্তন করে রোগ প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে এবং এটা হলো উদয়পুরের অন্যতম বিখ্যাত প্রাকৃতিক চিকিৎসা কেন্দ্রগুলির মধ্যে একটা।
জীবনধারা সংক্রান্ত সকল সমস্যার জন্য প্রচলিত চিকিৎসার চেয়ে প্রাকৃতিক চিকিৎসা অনেক ভালো। অনিবার্য অপারেশন এবং চিকিত্সার তুলনায়, স্বাস্থ্যকর জীবনধারা এবং প্রকৃতির স্পর্শ আপনাকে প্রচুর টাকা বাঁচাতে সাহায্য করতে পারে। এটা আপনাকে কম খরচে দীর্ঘ সময়ের জন্য সেরা স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে।
অ্যালোপ্যাথির দ্বারা তৈরি করা ওষুধের উপকারিতার পাশাপাশি কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। প্রাকৃতিক চিকিৎসা একটা থেরাপির অংশ হিসেবে প্রাকৃতিক উপাদান এবং আক্রমণকারী নয় এমন কৌশলগুলোকে নিযুক্ত করে যা নিরাপদ এবং এর কোনো প্রতিকূল প্রভাব নেই। প্রাকৃতিক চিকিৎসা আপনার শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়।
যেখানে অ্যালোপ্যাথিতে শুধুমাত্র একটা ট্যাবলেট বা একটা শট দেওয়া হয়, সেখানে প্রাকৃতিক চিকিৎসা স্বাস্থ্যকে সুরক্ষিত রাখার সমস্ত দিক অর্থাৎ মনস্তাত্ত্বিক, শারীরিক এবং আধ্যাত্মিক দিককে বিবেচনা করে। প্রাকৃতিক চিকিৎসা শুধুমাত্র স্বাস্থ্যের অবস্থাকেই ঠিক করে না বরং এটা অন্তর্নিহিত ভারসাম্যহীনতাকেও সংশোধন করে এবং আপনাকে আরো শক্তিশালী বোধ করতে সাহায্য করে।
প্রাকৃতিক চিকিৎসার মৌলিক লক্ষ্যগুলোর মধ্যে একটা লক্ষ্য হলো প্রথম থেকেই রোগ প্রতিরোধ করা, যেটা হলো রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার অন্যতম কার্যকরী উপায়। গবেষণার প্রথমে রয়েছে রোগ প্রতিরোধ করা আর খাবার হলো সুস্থ শরীর ও ইমিউন সিস্টেম অর্জন করার সবথেকে দিকগুলির মধ্যে একটা।
একজন প্রাকৃতিক চিকিত্সক অনেক সাধারণ রোগের চিকিৎসা করতে পারে যেগুলোকে মানসম্মত ওষুধের মাধ্যমে সামগ্রিকভাবে নিয়ন্ত্রিত করা হয়। প্রাকৃতিক চিকিৎসার দ্বারা নিরাময় করা যায় এমন সবচেয়ে সাধারণ অসুস্থতাগুলোর মধ্যে কয়েকটা রোগ হলো হজমের সমস্যা, অ্যালার্জি, মাথাব্যথা এবং সাধারণ সর্দি। একজিমা এবং সোরিয়াসিস হলো এমন চর্মরোগের উদাহরণ যার নিরাময় প্রাকৃতিক চিকিৎসার দ্বারা করা যেতে পারে। উদ্বেগ এবং বিষন্নতার মতো মানসিক রোগের জন্য বিভিন্ন ধরণের চিকিৎসা করা যেতে পারে। আপনার উপসর্গ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে পুষ্টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, আর এটা প্রাকৃতিক চিকিত্সা প্রক্রিয়ার একটা অংশ।
প্রাকৃতিক চিকিৎসকেরা যখন কোনো চিকিত্সার পরিকল্পনা তৈরি করেন তখন ব্যক্তিগত চাহিদা এবং স্বাস্থ্যের পরিস্থিতিকেও বিবেচনা করা হয়। এর ফলে, তাঁরা যে চিকিত্সার পরিকল্পনাগুলো করেন সেটা পরিবর্তিত হতে পারে। তবে তাঁরা সকলেই একই তত্ত্ব মেনে চলেন।